গৌড় জনপদের পরিচয় দাও
গৌড় বাংলার প্রাচীন জনপদ। গৌড় বলতে কোনো অঞ্চলকে বুঝায় তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। হিন্দু যুগের শেষে গৌড় ও বঙ্গ প্রধানত এ দুই ভাগে বাংলা বিভক্ত হয়ে যায়। মুর্শিদাবাদের একটি অঞ্চল গৌড় বিষয় নামের উল্লেখ আছে।
প্রশ্নঃ গৌড় জনপদের পরিচয় দাও
উত্তরঃ
গৌড় বাংলার প্রাচীন জনপদ। গৌড় বলতে কোনো অঞ্চলকে বুঝায় তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। এ গৌড় নামটি এত বেশি পরিচিত ছিল যে বাংলার কোনো অংশে তা অবস্থিত ছিল সে সম্পর্কে সঠিকভাবে বলা যায় না। এর ব্যাতি এতোই বৃদ্ধি পেয়েছিল যে সমস্ত বাংলাকেই গৌড় দেশ বলে সময়ে সময়ে আখ্যা নেওয়ার দৃষ্টান্ত রয়েছে। তবে গৌড় নামটা যে প্রাচীন তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
পাণিনি সূত্রে গৌড়পুরের এবং কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে গৌড়িক স্বর্ণের উল্লেখ আছে। রাষ্ট্রকুট রাজ প্রথম অমোঘবর্ষের অনুশাসন লিপিতে মুর্শিদাবাদের একটি অঞ্চল গৌড় বিষয় নামের উল্লেখ আছে। ষষ্ঠ শতাব্দীতে বরাহমিহিরের বৃহৎ সংহিতায় ‘গৌড়ের কথা আছে এবং গৌড়কে পুণ্ড্র, তাম্রলিপ্তি, বঙ্গ, সমতট থেকে পৃথক অঞ্চল বলা হয়েছে। ভবিষ্যৎ পুরাণে’ গৌড়কে পদ্মা নদীর দক্ষিণে এবং বর্ধমানের উত্তরে অবস্থিত এলাকা বলে বর্ণনা করা হয়। সপ্তম শতাব্দীতে গৌড়ের রাজধানী ছিল মুর্শিদাবাদের কর্ণসুবর্ণ। এটা ছিল শশাঙ্কের রাজধানী। বাংলা বিহারের অনেক নরপতিই গৌড়েশ্বর নামে খ্যাত ছিল। আবার রাজা শশাঙ্কের সময় হতে গৌড় নামটি প্রসিদ্ধ লাভ করে। তুর্কী আফগানদের আমলে মালদা জেলার অন্তর্গত লক্ষ্মণাবতী গৌড় নামে পরিচিত হয়েছিল। ত্রয়োদশ ও চতুর্দশ শতাব্দীতে রচিত জৈন গ্রন্থটিতে গৌড় বা লক্ষণাবতীর উল্লেখ পাওয়া যায়। হিন্দু যুগের শেষে গৌড় ও বঙ্গ প্রধানত এ দুই ভাগে বাংলা বিভক্ত হয়ে যায়। আবার কিছু ঐতিহাসিক অনুমান করেন যে, বর্তমান ভাগলপুর জেলার অন্তর্গত চম্পানগরী ছিল গৌড় রাজ্যের রাজধানী এবং সীমানা ছিল বর্তমান মালদা মুর্শিদাবাদ, বীরভূম ও বর্ধমানের অংশ বিশেষ। বরাহমিহিরের বৃহৎ সংহিতার লেখা যায় যে, গৌড় অন্যান্য জনপদ অপেক্ষা আরও একটি আলাদা জনপদ ছিল।
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।
আপনার মূল মান মতামতটি আমাদের জানান। আমি শালীন ভাষা ব্যাবহার করবো এবং অশ্লীল ভাষা ব্যাবহার থেকে বিরত থাকবো। কৌণিক বার্তা.কম আপনার আইপি অ্যাড্রেস ব্লকের ক্ষমতা রাখে।
comment url