অনুচ্ছেদ : পলিথিন মুক্ত বাংলাদেশ | Polythene Muktu Bangladesh onucched
পলিথিন আমাদের পরিবেশের অনেক জন্য ক্ষতিকর। স্বাভাবিকভাবে পলিথিন পঁচনশীল নয়। ব্যবহৃত পলিথিনের পরিত্যক্ত অংশ দীর্ঘদিন অপরিবর্তিত ও অবিকৃত থেকে মাটি, পানি ইত্যাদি দূষিত করে। পলিথিন মাটির উবর্বরতা হ্রাস করে ও মাটির গুনাগুন পরিবর্তন করে ফেলে। আমাদের উচিত পলিথিন মুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা।
পলিথিন |
পলিথিন মুক্ত বাংলাদেশ
বিষয়ঃ অনুচ্ছেদ
শ্রেণিঃ class 5 6 7 8 9 | ক্লাস ৩ ৫ ৬ ৭ ৮ ৯ ১০
পরিবেশ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে পলিব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ করার ঘটনা এক যুগান্তকারী ইতিবাচক দিক। পলিথিন আমাদের পরিবেশের অনেক জন্য ক্ষতিকর। স্বাভাবিকভাবে পলিথিন পঁচনশীল নয়। ব্যবহৃত পলিথিনের পরিত্যক্ত অংশ দীর্ঘদিন অপরিবর্তিত ও অবিকৃত থেকে মাটি, পানি ইত্যাদি দূষিত করে। পলিথিন মাটির উবর্বরতা হ্রাস করে ও মাটির গুনাগুন পরিবর্তন করে ফেলে। যে পলিথিন আমাদের হাটে-ঘাটে-মাঠে সঙ্গী ছিল তা আজ ব্যবহার নিষিদ্ধ। যদিও এটি কোনোদিন আমাদের সংস্কৃতির অংশ ছিল না, এর তৈরি উপকরণও আমাদের দেশের নয়। তবু পলিথিনের নিয়ন্ত্রণহীন ব্যবহারে আমাদের দেশ এক মারাত্মক পরিবেশগত সমস্যার মুখে পড়েছিল। অবশেষে পলিথিন নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার সত্যিকার অর্থেই একটি বলিষ্ঠ ও গণমুখী পদক্ষেপ নিয়েছেন। আমাদের দেশে পলিথিন বলতে পলিব্যাগকেই বোঝায়। পলিব্যাগ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সাধারণত জিনিসপত্র বহন ও.মোড়কের কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বিজ্ঞানের পরিভাষায় এর নাম পলিইথাইলিন। পলিথিন একপ্রকার রাসায়নিক পদার্থ এবং এটি প্রস্তুত হয় বিষাক্ত প্রোপাইলিনের সঙ্গে পেট্রোলিয়াম হাইড্রোকার্বনের কয়েকটি মলিকুলের সংমিশ্রণে। অন্যান্য পদার্থের মতো পলিথিন ভেঙে বা রূপান্তরিত হয়ে অন্য কোনো পদার্থে পরিণত হয় না। পলিথিন অক্ষয়। কারণ, এটিকে কোনো অণুজীব মাইক্রন অর্গানিজম খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে না। পলিথিন মুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা আমাদের সকলের উচিত।
পলিথিন পোড়ালে এর উপাদান পলিভিনাইল ক্লোরাইড পুড়ে কার্বন মনোক্সাইড উৎপন্ন হয়ে বাতাস দূষিত করে পলিথিনের ব্যাগ ও অন্যান্য জিনিস বাংলাদেশ পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। ‘নারডল’ নামক এক প্রকার প্লাস্টিক বর্জ্য সমুদ্রের পানিতে মিশে পানি দূষিত হচ্ছে। এতে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র হুমকির মুখে পড়ছে। পলিথিন ও বিভিন্ন প্লাস্টিক পণ্য ব্যাপকভাবে ব্যবহারে বাংলাদেশে খাল-বিল, নদী-নালা থেকে শুরু করে সমুদ্র পর্যন্ত প্লাস্টিক ছড়িয়ে পড়ছে। এতে পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। সেই সাথে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র্য। প্লাস্টিক শুধু আসবাবপত্র বা পলিথিনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। বর্তমানে নামিদামি কসমেটিক কোম্পানির সাবান, ফেসওয়াস, টুথপেস্ট, বডিওয়াস, ডিটারজেন্ট, বিস্কিট , চানাচুর, চিফস, মশলা ইত্যাদিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন দ্রব্যাদির মোড়কে মাইক্রোবিড নামক ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণার উপস্থিতি দেখা যায়। যা ব্যবহারের পর নদী-নালা, খাল-বিল ও অন্যান্য জলাশয়ে যাচ্ছে এবং মাছের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করছে। আর এর ফলে চর্মরোগসহ মারাত্মক ক্যান্সার পর্যন্ত হচ্ছে।
পলিথিন তৈরির চেয়ে আরও ভয়াবহ ক্ষতিকর হচ্ছে পুরানো পলিথিন পুরিয়ে এর থেকে আবার নতুন পলিথিন বা প্লাস্টিক সামগ্রী তৈরী করা। ব্যবহারের পর ফেলে দেওয়া পুরনো পলিথিন বা পানির বোতল কুড়িয়ে এনে তা গলিয়ে আবারও বানানো হচ্ছে নতুন ব্যাগ। এতে পরিবেশ আরও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ব্যবহারের পর ফেলে দেওয়া নোংরা পলিথিন ব্যাগ বা বোতল তারা সংগ্রহ করেন। সেগুলো বাছাই ও পরিষ্কার করে একত্রে রাখেন। আর এই কাজের জন্য একেকজন শ্রমিক মাসিক পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা বেতন পান। এসব পলিথিন বা কুড়ানো বোতল পুরান বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার কারখানায় পাঠানো হয়। সেখানে পুরনো পলিথিন গলিয়ে তা দিয়ে আবার তৈরি করা হচ্ছে নতুন পলিথিন ব্যাগ। এতে করে বায়ুদূষণ মারাত্মক আকার ধারণ করছে। পলিথিন এমনই একটি পদার্থ যা পরিবেশকে নানাভাবে দূষিত করে। পলিথিন পচিয়ে নষ্ট করা যায় না। নদী, খাল, রাস্তাঘাট, খেলার মাঠ, কৃষিজমি, শুকনো পুকুর, ডোবা, ড্রেন, বৈদ্যুতিক ও টেলিফোন তার, ঘরের চালা অনুচ্ছেদ লিখন সবখানেই পলিথিন ব্যাগ জায়গা করে নিয়েছে। শহরের বর্জ্য পানির ড্রেন ক্রমাগত আটকে যাচ্ছে। সরকার জনস্বার্থে পলিথিন নিষিদ্ধ করার মতো একটি প্রশংসনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। এ পদক্ষেপকে পূর্ণ কার্যকর করার জন্য জনগণের সক্রিয় সহযোগিতা ও সচেতন অংশগ্রহণ খুবই প্রয়োজন। অন্যথায় অসাধু লোকদের অতৎপরতায় নানাভাবে পলিথিনের জঞ্জাল সমাজে টিকে থাকবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, পরিবেশ বিশুদ্ধিকরণ সরকারের একার দায়িত্ব নয়, জনগণেরও দায়িত্ব। আমাদের চেষ্টা করতে হবে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার কমার তাহলে বাংলাদেশ পলিথিন মুক্ত হবে।
অনুচ্ছেদ
অনুচ্ছেদ হলো কোন একটি মূল বক্তব্যকে সম্প্রসারিত করে লেখার কয়কেটি পরস্পর সম্পকিত বাক্যের সমষ্টিই অনুচ্ছেদ। কোন একটি নিদিষ্ট চিন্তা/ধারণা বা বিষয়কে কতগুলো পরস্পর সম্পর্কযুক্ত বাক্যের সাহায্যে প্রকাশ করাই হলো “অনুচ্ছেদ লিখন”।
সবগুলো অ আ ই ঈ উ ঊ ঋ এ ঐ ও ঔ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট ঠ ড ঢ ণ ত থ দ ধ ন প ফ ব ভ ম য র ল শ ষ স হ ড় ঢ় #
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।
আপনার মূল মান মতামতটি আমাদের জানান। আমি শালীন ভাষা ব্যাবহার করবো এবং অশ্লীল ভাষা ব্যাবহার থেকে বিরত থাকবো। কৌণিক বার্তা.কম আপনার আইপি অ্যাড্রেস ব্লকের ক্ষমতা রাখে।
comment url