রচনাঃ শেখ রাসেল দিবস | রচনা শেখ রাসেল ৫০০ ও ১০০০ শব্দ
[ ভূমিকা, শেখ রাসেলের জন্ম, শেখ রাসেলের জীবনে বঙ্গমাতার অবদান, শেখ রাসেলের নামকরণ, আমাদের সকলের ভালোবাসার শেখ রাসেল, শেখ রাসেলের ছেলেবেলা, জেনারেল রাসেল এবং তার বাহিনী, ইতিহাসের জগন্যতম হত্যাকাণ্ড, শেখ রাসেলের চঞ্চলতা, উপসংহার ]
বিষয়ঃ শেখ রাসেলের রচনা | শেখ রাসেল দিবস রচনা ১০০০ শব্দ | শেখ রাসেল রচনা প্রতিযোগিতা | Shekh Rasel Rochona
শ্রেণিঃ ক্লাস ৪ ৫ ৬ ৭ ৮ ৯ ১০ এসএসসি এইচএসসি পরীক্ষার | Class 4 5 6 7 8 9 10 SSC HSC JSC PSC
শেখ রাসেল দিবস
শেখ রাসেল দিবস রচনা |
ভূমিকা
১৯৬৪ সালে পাক শাসনে পর্যদুস্ত পূর্ব পাকিস্তানের এই সময়টি ছিল রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ও নানা ঘটনাপ্রবাহে টালমাটাল এক সময় ৷ এই সময়ে বাঙালির মুক্তির অগ্রদূত হয়ে ওঠেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ভাষা আন্দোলন, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, পাক শোষণসহ নানা বিষয়ে বঙ্গবন্ধুর সাহসী অবস্থান তাকে পরিণত করে বাঙালির মুক্তির অগ্রদূতে। সেই বছরেরই ১৮ অক্টোবর, ধানমন্ডির ঐতিহাসিক ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধুর বাড়ি আলোকিত করে জন্ম হলো এক শিশুর। শিশুটি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের বুকের ধন কনিষ্ঠ সন্তান এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদরের ছোট ভাই। ইতিহাস তাকে চেনে শেখ রাসেল নামে।
শেখ রাসেলের জন্ম
তখন হেমন্তকাল, সময়টা ১৮ই অক্টোবর ১৯৬৪। নবান্নের নতুন ফসলের উৎসবে আগমন নতুন অতিথির। এ যেন বাঙালীর আনন্দ, বাংলার আনন্দ। ধানমন্ডির সেই ঐতিহাসিক ও ভয়ানক ৩২ নম্বর রোডের বাসায় শেখ হাসিনার রুমেই রাতে দেড়টায় জন্ম হয় রাসেলের। রাসেলের আগমনে পুরো বাড়ি জুড়ে বয়ে যায় আনন্দের জোয়ার।একটু বড়সড়ই হয়েছিলো শিশু রাসেল। জন্মের কিছুক্ষন পরেই সকলকে জানানো হয়। পরে বোন হাসিনা এসে তার ওড়না দিয়ে ভেজা মাথা পরিষ্কার করে দেন।
শেখ রাসেলের নামকরণ
শেখ রাসেলের নামকরণের পেছনেও এক সুন্দর কাহিনী রয়েছে। বঙ্গবন্ধু বরাবরই ছিলেন বিশ্বশান্তি ও সহাবস্থানের পক্ষপাতী এবং যুদ্ধের ঘোর বিরোধী। এই সূত্র তিনি বিখ্যাত নোবেল বিজয়ী দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেলের একজন গুণমুগ্ধ ভক্ত ছিলেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ করতে হয় বার্ট্রান্ড রাসেল নোবেলবিজয়ী দার্শনিক কিংবা সমাজবিজ্ঞানীই ছিলেন না, ছিলেন আন্তর্জাতিক যুদ্ধ বিরোধী আন্দোলনের একজন বড় মাপের নেতাও। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে সমগ্র পৃথিবী যখন সম্ভাব্য একটি পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কায় সন্ত্রস্ত হয়ে আছে, তখন যুদ্ধ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখ হয়ে আবির্ভূত হয়েছিলেন বার্টান্ড রাসেল। এমনই মহান ব্যক্তির ব্যক্তিত্বে অনুপ্রাণিত হয়ে বঙ্গবন্ধু তার কনিষ্ঠ পুত্রের নাম রাখেন শেখ রাসেল।
শেখ রাসেলের ছেলেবেলা
শেখ রাসেলের ছেলেবেলা দেশের সমকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতির মতোই বর্ণময়। জন্মের পর খুব বেশি দিন তিনি বাবার সান্নিধ্য পাননি। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে কিছুদিনের মধ্যেই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়। প্রথমে ঢাকায় থাকলেও পরে পাকিস্থানে তাকে স্থানান্তরিত করা হয়। শোনা যায় বড় আপা শেখ হাসিনার সঙ্গে কারাগারে বঙ্গবন্ধুকে দেখতে গিয়ে মাত্র দু বছর বয়সের রাসেল তার আপাকে জিজ্ঞেম করেছিলেন, সে বঙ্গবন্ধুকে বাবা বলে ডাকতে পারে কিনা। সামান্য কিছুদিনের জীবনের বেশিরভাগ সময়টাই রাসেল কাটিয়েছিলেন তার মা এবং বোনদের কাছে। তার পড়াশোনা শুরু হয়েছিল ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল ও কলেজে। ১১ বছর বয়সে যখন তার মৃত্যু হয় তখন তিনি চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন।
জেনারেল রাসেল ও তার বাহিনী
জেনারের রাসেলের ছিলো নেতৃত্ব সুলভ আচরন। ঢাকায় তার খেলার সাথী তেমন একটা ছিলো না কিন্তু যখন তারা টঙ্গিপাড়ায় বেড়াতে যেত, সেখানে তার খেলার সাথি ছিলো অনেক সেই বাচ্চাদের জড়ো করতো এক জায়গায়, তাদের জন্য খেলনা বন্দুক বানাতো আর সেই বন্দুক হাতেই তাদের প্যারেড করাতো।আসলে রাসেলের পরিবেশটাই ছিলো এমন। রাসেলের খুদে বাহিনীর জন্য জামা-কাপড় ঢাকা থেকেই কিনে দিতে হতো। প্যারেড শেষে সবার জন্য খাবারের ব্যবস্থা থাকতো। তখন যদি রাসেলকে কেউ জিজ্ঞেস করতো বড় হয়ে তুমি কি হবে? রাসেল বলতো 'আমি অফিসার হবো'।
শেখ রাসেলের চঞ্চলতা
শেখ রাসেল ছিলেন ভীষণ দুরন্ত। তার দুরন্তপনার সঙ্গী ছিল বাই-মাইকেল। তিনি রাষ্ট্রীয় প্রটোকল ছাড়াই সাইকেলে করে স্কুলে যেতেন। পাড়ার আর দশজন সাধারণ ছেলের মতো। এতে তার চঞ্চলতার দিকটিই ফুটে ওঠে।
রাসেলের জীবনে বঙ্গমাতার অবদান
ভালো মানুষ হয়ে বেড়ে ওঠার পেছনে পরিবার একটি বড় ধরনের ভূমিকা পালন করে থাকে। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব ছিলেন একজন আদর্শ মাতা। তিনি তার সন্তানদের নৈতিক শিক্ষায় মানুষ করেছেন, দিয়েছেন মানবিক গুণাবলিও। ঠিক তেমনিভাবে শেখ হাসিনার মাঝে অনুরূপ গুণাবলি প্রতীয়মান। তিনি তার সন্তানকে নৈতিক শিক্ষা আর মানবিক গুণাবলি দিয়ে জয় পুতুলকে গড়ে তুলেছেন। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিরা শুধু জাতির পিতাকে হত্যা করেই ক্ষ্যান্ত যায়নি, বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকার চিহ্নটুকুও নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল। আর তাদের ওই ঘৃণ্য অপচেষ্টা যে শতভাগ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে- এটি আজ প্রমাণিত৷
আমাদের শেখ রাসেল
শেখ রাসেল বয়সে অনেক ছোট হলেও শেখ রাসেলের হৃদয়-মন ছিল অনেক বড়। মানুষের উপকার করার জন্য সে যেন সবসময় এক পায়েই দাঁড়িয়ে থাকতো। বিশেষ করে সাধারণ মানুষের প্রতি তার ছিল গভীর ভালোবাসা। শুধু তাই নয়, তার শিশু মূলভ সব আচরণ বা কর্মকান্ডের মধ্যে কেবলই সরলতাই নয়,সাধারণ মানুষের প্রতি রামেলের কেমন ভালোবাসা ও দায়িত্ব বোধ ছিল তার একটি ঘটনা লেখা হলো তখন শীতের দিন। ৩২ নমারের পাশের বাড়িতে রাসেল নামে আর একটি শিশু ছিল। রাসেল প্রায় সময় তার সাথে খেলতো। এদিন এক বুড়ি পাশের বাড়িতে ভিক্ষা করতে আসেন। এসময় বাড়ি থেকে বলা হয়, ভিক্ষা নয়, বাড়ির কি একটা কাজ করে দিলে এক টাকা দেয়া হবে। বুড়ি রাজি হন।কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার। পর বুড়িকে মাত্র ২৫ পয়সা দেয়া হয়। এতে তিনি কান্নাকাটি করতে করতে ওই বাড়ি থেকে বের হয়ে আসেন। এ ঘটনা কিশোর রাসেলের মনে সাংঘাতিক দাগ কাটে এবং কষ্ট দেয়। রাসেল সেই বুড়িমাকে পরম যত্নে তুলে এনে গেটের সামনে বসিয়ে রাখে। বলেন আব্বা (বঙ্গবন্ধু এলে কথা বলিয়ে দিবেন। বিচার চাইতে হবে। তিনি বিচার করে দেবেন। দুপুরে তাকে খাবারও দেয়া হয়। এ দিকে শীতে বড়িমার জুবুথুবু অবস্থা। কখন কি হয় বলা যায় না। কিন্তু রাসেলের এক কথা ‘আব্বা আসলে বিচার হবে। তারপর বুড়িমা যাবেন। 'মানুষের প্রতি এমন ভালোবাসা, মমত্ববোধই তাকে করেছে আমাদের সকলের ভালোবাসার পাত্র বঙ্গবন্ধুকে যেভাবে আমার মনে রাখি তেমনিভাবে বাঙালি জাতি যত দিন থাকবে তারা তাদের হৃদয়ে শেখ রাসেলকে মনে রাখবে।
ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড
১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট এর সেই অভিশপ্ত রাতের সঙ্গে পরিচিতি আমাদের সকলেরই রয়েছে। সেই রাতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নির্মম পরিণতির কথা আমরা সকলেই কম বেশি জানি। একদল তরুণ সেনা কর্মকর্তা সেই দিন রাতে শেখ মুজিবের ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাসভবন ট্যাংক দিয়ে গিলে ফেলেন। শেখ মুজিবের ব্যক্তিগত কর্মচারী মহিতুল ইসলামের কথা অনুযায়ী, রাসেল দৌড়ে এসে তাকে জড়িয়ে ধরেন, জানতে চান সেনারা তাকেও মারবে কিনা। এমতাবস্থায় একজন সেনা কর্মকর্তা মহিতুলকে এমে মারলে রাসেল তাকে ছেড়ে দেয়। সে কাঁদতে থাকে থাকে মায়ের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য। সেই সময় একজন ঘাতক রাসেলকে ভেতরের ঘরে নিয়ে গিয়ে ব্রাশ ফায়ারের মাধ্যমে হত্যা করে।
উপসংহার
শেখ রাসেল বাঙালি জাতির কাছে এক আবেগের নাম। বাঙালি জাতির তারমধ্যে খুঁজে পায় রূপকথার মতো নিজেদের ছেলেবেলা।শেখ রাসেল এর মধ্যে দিয়ে বেঁচে থাকে আপামর বাঙালি শৈশব। অন্যদিকে নির্মম মৃত্যুর কাহিনী বারবার মনে করিয়ে দেয় আমাদের দেশের করুন ইতিহাসের কথা। তার স্মৃতিকে চিরদিন বাঁচিয়ে রাখার উদ্দেশ্যেই বাংলাদেশ গঠন করা হয়েছে শেখ রাসেল দিবস, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদ, রাসেল ক্রীড়া চক্র, শেখ রাসেল নামে একটি স্কুটি স্টেডিয়াম রয়েছে, তাছাড়া বাংলাদেশ সরকার ১৮ অক্টোবর এই দিনটিকে বাংলাদেশ শিশু দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
Tags:
রচনা শেখ রাসেল শেখ রাসেল রচনা রচনা শেখ রাসেল দিবস ১০০০ শব্দ | Shekh Rasel roconairocona Shekh Rasel রচনা শেখ রাসেল, শেখ রাসেল রচনা, রচনা শেখ রাসেল দিবস ১০০০ শব্দ, Shekh Rasel rocona, rocona Shekh Rasel, রচনা শেখ রাসেল দিবস, শেখ রাসেল দিবস রচনা, রচনা রাসেল, শেখ রাসেল রচনা ৩০০ শব্দ, রচনা শেখ রাসেল ৫০০ শব্দ, rocona Shekh Rasel dibos, sheikh rasel amader bondhu rochona, shekh rasel amader bondhu, বঙ্গবন্ধু পুত্র সর্বকনিষ্ঠ শেখ রাসেল, বাংলা রচনা শেখ রাসেল, রচনা শেখ রাসেল আমাদের বন্ধু, রচনা শেখ রাসেল আমাদের ভালোবাসা, শেখ রাসেল রচনা প্রতিযোগিতা ২০২৩, শেখ রাসেল বাংলা রচনা, শেখ রাসেল রচনা লেখার নিয়ম, শেখ রাসেল অনলাইন প্রতিযোগিতা Rasel, রচনা শেখ রাসেল দিবস, শেখ রাসেল দিবস রচনা,রচনা রাসেল, শেখ রাসেল রচনা ৩০০ শব্দ, রচনা শেখ রাসেল ৫০০ শব্দ, rocona Shekh Rasel dibos, sheikh rasel amader bondhu rochona, shekh rasel amader bondhu, বঙ্গবন্ধু পুত্র সর্বকনিষ্ঠ শেখ রাসেল, বাংলা রচনা শেখ রাসেল, রচনা শেখ রাসেল আমাদের বন্ধু, রচনা শেখ রাসেল আমাদের ভালোবাসা, শেখ রাসেল রচনা প্রতিযোগিতা ২০২৩, শেখ রাসেল বাংলা রচনা, শেখ রাসেল রচনা লেখার নিয়ম, শেখ রাসেল অনলাইন প্রতিযোগিতা, রচনা শেখ রাসেল দিবস ১০০০ শব্দ, শেখ রাসেল রচনা প্রতিযোগিতা ২০২৩,vরচনা শেখ রাসেল আমাদের ভালোবাসা, রচনা শেখ রাসেল আমাদের বন্ধু, বাংলা রচনা শেখ রাসেল, rocona Shekh Rasel dibos, রচনা শেখ রাসেল ৫০০ শব্দ, শেখ রাসেল বাংলা রচনা, রচনা শেখ রাসেল দিবস ক্লাস ৫, শেখ রাসেল রচনা ৩০০ শব্দ, বঙ্গবন্ধু পুত্র সর্বকনিষ্ঠ শেখ রাসেল, রচনা রাসেল ক্লাস ৬, sheikh rasel amader bondhu rochona ,vshekh rasel amader bondhu, rocona Shekh Rasel class 5 6 7 8 9 10, শেখ রাসেল দিবস রচনা, রচনা শেখ রাসেল, শেখ রাসেল রচনা, Shekh Rasel rocona
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।
১৯৭৬ সাল নয়১৯৭৫ সাল হবে
ধন্যবাদ, আমাদের সাথে থাকুন