বাংলাদেশের পাসপোর্ট এর জন্য অনলাইনে আবেদন করবেন যেভাবে?

বাংলাদেশের পাসপোর্ট এর আবেদন করবেন যেভাবে?
বাংলাদেশ পাসপোর্ট অফিস

কারো সাহায্য ছাড়াই নিজে কীভাবে পাসপোর্ট করবেন বাংলাদেশে পাসপোর্ট করার জন্য আপনি নিজেই আবেদন করতে পারেন। ই-পাসপোর্ট (ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট) করতে হলে কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হবে, যা সহজভাবে সম্পন্ন করা যায়। নিচে ধাপগুলো দেওয়া হলো:

পাসপোর্ট আবেদন ফর্ম পূরণ

১.১. ই-পাসপোর্ট ওয়েবসাইটে প্রবেশ-

প্রথমেই আপনাকে বাংলাদেশ ই-পাসপোর্টের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে হবে।

১.২. রেজিস্ট্রেশন-

যদি আপনি নতুন ব্যবহারকারী হন, তাহলে "Create Account" বা "নতুন একাউন্ট তৈরি করুন" অপশনে ক্লিক করে রেজিস্ট্রেশন করবেন। রেজিস্ট্রেশনের সময় আপনাকে নিচের তথ্য দিতে হবে:

  • নাম
  • ইমেইল আইডি
  • মোবাইল নম্বর
  • পাসওয়ার্ড তৈরি করতে হবে

এরপর আপনার মোবাইল নম্বরে একটি ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) যাবে, যা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হবে।

১.৩. ফর্ম পূরণ-

লগইন করার পর আপনাকে আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে। এই ফর্মে নিচের তথ্যগুলো চাওয়া হয়:

  • - ব্যক্তিগত তথ্য (নাম, জন্ম তারিখ, ঠিকানা)
  • - জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর (NID)
  • - পেশাগত তথ্য (যদি প্রযোজ্য হয়)
  • - পাসপোর্টের ধরন নির্বাচন (৫ বছর বা ১০ বছরের মেয়াদ)

১.৪. ফর্ম সাবমিশন ও প্রিন্ট-

আপনি যখন অনলাইনে ফর্ম পূরণ করবেন, তখন আপনাকে তা যাচাই করতে হবে। যাচাই করার পর ফর্মটি সাবমিট করে তার প্রিন্ট কপি সংরক্ষণ করুন। এটি পরবর্তীতে প্রয়োজন হবে।

পাসপোর্ট ফি জমা করার নিয়ম

২.১. ফি নির্ধারণ-

আপনার ই-পাসপোর্টের জন্য ফি নির্ধারিত থাকে। এর উপর নির্ভর করে আপনার জমা দিতে হবে:

  • **৫ বছরের মেয়াদ (৪৮ পৃষ্ঠা): সাধারণ ৩,৪৫০ টাকা (দ্রুত ফি ৬,৯০০ টাকা)
  • **১০ বছরের মেয়াদ (৬৪ পৃষ্ঠা): সাধারণ ৫,৭৫০ টাকা (দ্রুত ফি ৯,২০০ টাকা)

২.২. ফি জমা দেওয়ার পদ্ধতি-

আপনি নিচের যেকোনো মাধ্যম দিয়ে পাসপোর্ট ফি জমা দিতে পারবেন:

  • **ব্যাংক ডিপোজিট: নির্দিষ্ট ব্যাংকে গিয়ে সরাসরি জমা দিতে পারেন।
  • **অনলাইন পেমেন্ট: ব্যাংক ট্রান্সফার, মোবাইল ব্যাংকিং (যেমন বিকাশ, নগদ), অথবা ডেবিট/ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে অনলাইন পেমেন্ট করতে পারেন।

পাসপোর্ট বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান

৩.১. নির্ধারিত কেন্দ্রে উপস্থিতি-

আপনার ফর্ম এবং ফি জমা দেওয়ার পর আপনাকে একটি তারিখ দেওয়া হবে। সেই তারিখে নির্দিষ্ট পাসপোর্ট অফিস বা ই-পাসপোর্ট সেন্টারে উপস্থিত হতে হবে।

৩.২. প্রয়োজনীয় কাগজপত্র-

বায়োমেট্রিক তথ্যের দিন আপনার সাথে নিচের কাগজপত্রগুলো নিয়ে যাবেন:

  • **প্রিন্ট করা আবেদন ফর্ম
  • **জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) বা জন্ম সনদ
  • **আগের পাসপোর্ট (যদি থাকে)
  • **পাসপোর্ট ফি জমার রশিদ

৩.৩. বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়া-

সেন্টারে গিয়ে আপনাকে নিচের কাজগুলো করতে হবে:

  • **আপনার ফিঙ্গারপ্রিন্ট (আঙুলের ছাপ)
  • **আপনার ছবি তোলা হবে
  • **স্বাক্ষর প্রদান

পাসপোর্ট সংগ্রহ করার পদ্ধতি

৪.১. পাসপোর্ট প্রস্তুতির সময়

বায়োমেট্রিক তথ্য জমা দেওয়ার পর পাসপোর্ট প্রস্তুতির জন্য কিছু সময় নেয়। সাধারণত ১৫ থেকে ৩০ কর্মদিবস সময় লাগতে পারে, যদি দ্রুত সেবা না নেন।

৪.২. এসএমএস নোটিফিকেশন-

পাসপোর্ট প্রস্তুত হলে আপনাকে মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হবে। এছাড়াও ই-পাসপোর্ট ওয়েবসাইটে লগইন করেও আপনার পাসপোর্টের অবস্থা দেখতে পারবেন।

৪.৩. পাসপোর্ট সংগ্রহ-

এসএমএস পাওয়ার পর নির্দিষ্ট কেন্দ্রে গিয়ে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র এবং প্রাপ্তি স্লিপ দেখিয়ে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে পারবেন।

পাসপোর্ট প্রক্রিয়ার কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস

  • **সব সময় ফর্ম পূরণ করার সময় সঠিক তথ্য প্রদান করবেন।
  • **ফি জমা দেওয়ার পর রশিদটি সাবধানে রাখুন।
  • **ছবি তোলার দিন পরিষ্কার পোশাক পরিধান করবেন এবং মুখ পরিষ্কার রাখতে হবে (ধূসর ব্যাকগ্রাউন্ডে ছবি তোলা হয়)।

আপনি পুরো প্রক্রিয়াটি নিজে সম্পন্ন করতে পারেন, কোনো মধ্যস্থতাকারীর প্রয়োজন নেই।

এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।

Next Post Previous Post
মন্তব্যগুলো দেখান
মন্তব্যগুলো যোগ করুণ

আপনার মূল মান মতামতটি আমাদের জানান। আমি শালীন ভাষা ব্যাবহার করবো এবং অশ্লীল ভাষা ব্যাবহার থেকে বিরত থাকবো। কৌণিক বার্তা.কম আপনার আইপি অ্যাড্রেস ব্লকের ক্ষমতা রাখে।

comment url