SSC (এসএসসি) ভূগোল ও পরিবেশ ১২তম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট সমাধান ২০২২, SSC Bhugola O Paribesa Assignment Answer 12th Week 2022, এসএসসি ১২তম সপ্তাহ ভূগোল ও পরিবেশ অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান
এসএসসি ১২তম সপ্তাহ ভূগোল ও পরিবেশ অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ২০২২, SSC Bhugola O Paribesa Assignment Answer 12th Week 2022
SSC (এসএসসি) ভূগোল ও পরিবেশ ১২তম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট প্রশ্ন ২০২২, SSC Bhugola O Paribesa 12th week assignment answer 2022
SSC (এসএসসি) ভূগোল ও পরিবেশ ১২তম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট সমাধান ২০২২, SSC Bhugola O Paribesa 12th week assignment answer 2022
বিষয়ঃ ভূগোল ও পরিবেশ
বিষয় কোডঃ ১১০
তারিখ : ২১ ফেব্রুয়ারি , ২০২২
বরাবর
প্রধান শিক্ষক
মহারাজপুর উচ্চ বিদ্যালয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
বিষয় : " রাতিনের মানচিত্র দুটির প্রকৃতি বিশ্লেষণপূর্বক একটি প্রতিবেদন ।
জনাব , বিনীত নিবেদন এই যে , আপনার আদেশ নং ম.উ.বি ৩১৯৮-৬ তারিখ : ১৬ ফেব্রুয়ারি , ২০২২ অনুসারে রাতিনের মানচিত্র দুটির প্রকৃতি বিশ্লেষণপূর্বক প্রতিবেদনটি নিম্নে পেশ করছি। রাতিনের মানচিত্র দুটির প্রকৃতি বিশ্লেষণ
ভূমিকা : মানচিত্র হলো একটি ড্রয়িং বা রেখাঙ্কন যা ভূপৃষ্ঠের কোনো ছোট বা বৃহৎ অঞ্চলকে উপস্থাপন করে থাকে । মানচিত্র কোনো অঞ্চল বা দেশের ভূপ্রকৃতি , জলবায়ু , উদ্ভিদ , মাটি , পানি ও অনেক কিছু সম্পর্কে ধারণা দেয় । এর সাহায্যে আমরা বিভিন্ন মহাদেশ ও মহাসাগরের অনেক কিছু সম্পর্কে জানতে পারি । মানচিত্রে একটি ছোট কাগজের মধ্যে অতি নিখুঁতভাবে বিভিন্ন বিষয়ের অবস্থা দেখানো যায় ।
(ক) নং প্রশ্নের উত্তর
ইংরেজি ‘ map ' শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ মানচিত্র । ল্যাটিন শব্দ ' mappa ' থেকে ' map ' শব্দটি এসেছে । ল্যাটিন ভাষায় কাপড়ের টুকরাকে ' mappa ' বলে । আগেকার দিনে কাপড়ের উপরই map বা মানচিত্র আঁকা হতো । পৃথিবী বা কোনো অঞ্চল বা এর অংশবিশেষকে কোনো সমতল ক্ষেত্রের উপর অঙ্কন করাকে মানচিত্র বলে । মানচিত্র হলো নির্দিষ্ট খেলে অক্ষরেখা বা দ্রাঘিমারেখাসহ কোনো সমতল ক্ষেত্রের উপর পৃথিবী বা এর অংশবিশেষের অঙ্কিত প্রতিরূপ । এই সমতল ক্ষেত্র হতে পারে এক টুকরা কাপড় বা কাগজ ।
একটি বৃহদাকার দেশ ও মহাদেশকে আমরা একটি ছোট বই বা খাতার পৃষ্ঠায় অঙ্কন করে দেখাতে পারি । এছাড়া মানচিত্রটির সঙ্গে ভূমির প্রকৃত দূরত্বটি বোঝানোর জন্য স্কেল ব্যবহার করে ভালোভাবে প্রকাশ করতে পারি । মানচিত্র বললেই আমাদের চোখে ভেসে ওঠে একটি দেশ , একটি অঞ্চল তথা একটি ভূখণ্ডের চিত্র বা একটি মহাদেশ বা সমগ্র পৃথিবী । একটি মানচিত্রের মধ্যে কতকগুলো সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করে মহাদেশটিতে কতটি দেশ এবং একেকটি দেশের মধ্যে কতটি প্রদেশ , বিভাগ , জেলা , রাস্তা , নদ - নদী , হ্রদ , পাহাড় - পর্বত ইত্যাদি দেখাতে পারি । এভাবে একটি দেশ ও মহাদেশের মধ্যে আমরা চাইলে ছোট একটি স্থানকেও সাংকেতিক চিহ্নের মাধ্যমে দেখিয়ে দিতে পারি । সর্বোপরি বলা যায় , কোনো স্থানের অবস্থান থেকে শুরু করে ঐ স্থানের খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে অবহিত হওয়ার জন্য মানচিত্রের কোনো বিকল্প নেই ।
(খ) নং প্রশ্নের উত্তর
মানচিত্র অনেক প্রকার হতে পারে । সাধারণত মানচিত্রে ব্যবহৃত স্কেল এবং বিষয়বস্তু অনুসারে মানচিত্রগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করা হয় ।
স্কেল অনুসারে মানচিত্র আবার দুই প্রকারের –
( ক ) বৃহৎ স্কেলের মানচিত্র এবং
( খ ) ক্ষুদ্র স্কেলের মানচিত্র ।
নৌচলাচল সংক্রান্ত নাবিকদের চার্ট , বিমানচলাচল সংক্রান্ত বৈমানিকদের চার্ট , মৌজা মানচিত্র বা ক্যাডাস্ট্রাল মানচিত্র প্রভৃতি বৃহৎ স্কেলের মানচিত্র । একটি ছোট এলাকা অনেক বড় করে দেখানো হয় বলে মানচিত্রের মধ্যে অনেক জায়গা থাকে এবং অনেক কিছু তথ্য এরূপ মানচিত্রে ভালোভাবে দেখানো যায় । ভূচিত্রাবলি মানচিত্র , দেয়াল মানচিত্র প্রভৃতি ক্ষুদ্র স্কেলের মানচিত্র । সমগ্র পৃথিবী বা মহাদেশ বা দেশের মতো বড় অঞ্চলকে একটি ছোট কাগজে দেখানো হয় বলে এ প্রকার মানচিত্রে বেশি জায়গা থাকে না । ফলে এ মানচিত্রে বেশি কিছু দেখানো যায় না ।
উপস্থাপিত বিষয়বস্তু হিসেবেও মানচিত্রগুলো দুই প্রকারের –
( ক ) গুণগত মানচিত্র এবং
( খ ) পরিমাণগত মানচিত্র ।
( ক ) গুণগত মানচিত্র : ভূতাত্ত্বিক মানচিত্র , ভূসংস্থানিক মানচিত্র , ভূমিরূপের মানচিত্র , মৃত্তিকা মানচিত্র , দেয়াল মানচিত্র , ভূচিত্রাবলি মানচিত্র , স্থানীয় বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র এবং মৌজা মানচিত্র গুণগত মানচিত্রের অন্তর্গত ।
( খ ) পরিমাণগত মানচিত্র : বায়ুর উত্তাপ , বৃষ্টিপাতের পরিমাণ , জনসংখ্যার বণ্টন , জনসংখ্যার ঘনত্ব , খনিজ উৎপাদন , বনজ উৎপাদন , শিল্পজ উৎপাদন প্রভৃতি পরিসংখ্যান তথ্য যেসব মানচিত্রে দেখানো হয় সেসব মানচিত্র পরিমাণগত মানচিত্রের অন্তর্গত । কার্যের উপর ভিত্তি করে কয়েক প্রকার মানচিত্র নিম্নরূপ
১। ক্যাডাস্ট্রাল বা মৌজা মানচিত্র ( Cadastral or Mouza map )
২। ভূসংস্থানিক মানচিত্র ( Topographic map )
৩। দেয়াল মানচিত্র ( Wall map )
৪। ভূচিত্ৰাৰপি বা এটলাস মানচিত্র
৫। প্রাকৃতিক মানচিত্র ( Physical map ) ।
৬। ভূতাত্ত্বিক মানচিত্র ( Geological map )
৭ । জলবায়ুপত মানচিত্র ( Climatic map )
৮। উদ্ভিদ বিধরক মানচিত্র ( Vegetation map )
৯। মৃত্তিকা বিষয়ক মানচিত্র ইত্যাদি ।
(গ) নং প্রশ্নের উত্তর
স্থানীয় বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র গঠন ভূগোল শাস্ত্রের একটি প্রধান ও প্রয়োজনীয় বিষয় । এই বিশাল পৃথিবীকে অথবা পৃথিবীর বিভিন্ন অংশের এক একটি সামাজিক রূপ এই ধরনের মানচিত্রের মধ্যে যেভাবে ফুটিয়ে তোলা যায় অন্য কোনো উপায়েই তা সম্ভব নয় । স্থানীয় বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে বিভিন্ন প্রতীক চিহ্নের মাধ্যমে ভূপ্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক বিষয়সমূহের একটি সুন্দর প্রতিচ্ছবি দেখতে পাওয়া যায় । এই প্রতীকগুলোর মাধ্যমে একদিকে যেমন পাহাড় - পর্বত , নদী - নালা , মালভূমি , হ্রদ , সমভূমি , পুকুর , ঝিল , বনভূমি প্রভৃতি বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিষয়ের পরিচয় পাওয়া যায় তেমনি অন্যদিকে রাস্তাঘাট , হাটবাজার , মসজিদ , মন্দির , হাসপাতাল , খেলার , মাঠ , জনবসতি , মানুষের ঘনত্ব , জীবিকা অর্জনের উপায় প্রভৃতি নানা সাংস্কৃতিক তথ্যেরও পরিচয় পাওয়া যায় । এই কারণে কোনো একটি অঞ্চলের সুবিধা - অসুবিধা , পারিপার্শ্বিক অবস্থা এবং নানা সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান করতে চাইলে এই মানচিত্রে তথ্য - উপাত্ত উপস্থাপনের নিয়মাবলি জানা একান্ত প্রয়োজন । যে কোনো ভাষায় একটি মানচিত্র পাঠ করতে হলে নানা ধরনের প্রতীক চিহ্নের সাহায্য নিতে হয় । পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ তাদের স্থানীয় বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রের মধ্যে এ সকল প্রতীক চিহ্ন ব্যবহার করে আসছে । এই কারণে এসব চিহ্নকে আন্তর্জাতিক প্রচলিত প্রতীক চিহ্ন বলে ।
আন্তর্জাতিক সাংকেতিক চিহ্ন |
স্থানীয় বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র পাঠ করার জন্য এই প্রতীক চিহ্নগুলো অত্যন্ত জরুরি বলে মানচিত্রের নিচের দিকে এই প্রতীক চিহ্নগুলোর সূচক ( Legend ) দেওয়া থাকে । যে ব্যক্তির এই চিহ্নগুলো সম্বন্ধে যত ভালো ধারণা থাকবে তিনি তত ভালোভাবে এই মানচিত্র পাঠ করতে পারবেন ।
(ঘ) নং প্রশ্নের উত্তর
উদ্দীপকে উল্লিখিত মানচিত্র দুটি হলো ক্যাডাস্ট্রাল বা মৌজা মানচিত্র ও ভূসংস্থানিক মানচিত্র । নিচে এদের ব্যাখ্যা দেওয়া হলো –
১। ক্যাডাস্ট্রাল বা মৌজ্জা মানচিত্র ( Cadastral or Mouza map ) : ক্যাডাস্ট্রাল শব্দটি এসেছে ফ্রেঞ্চ শব্দ ক্যাডাস্ট্রে ( Cadastre ) থেকে , যার অর্থ হচ্ছে রেজিস্ট্রিকৃত নিজের সম্পত্তি । এই মানচিত্র তৈরি করা হয় সাধারণত কোনো রেজিস্ট্রিকৃত ভূমি অথবা বিল্ডিং - এর মালিকানার সীমানা চিহ্নিত করার জন্য । আমাদের দেশে আমরা যে মৌজা মানচিত্রগুলো দেখতে পাই সেগুলো আসলে ক্যাডাস্ট্রাল মানচিত্র । এই মানচিত্রের মাধ্যমেই হিসাব করে সরকার ভূমির মালিক থেকে কর নিয়ে থাকে । এই মানচিত্রের সবচেয়ে বড় উদাহরণ হচ্ছে আমাদের গ্রামের মানচিত্রগুলো ( চিত্র ৩.৩ ) । এই মানচিত্রে নিখুঁতভাবে সীমানা দেওয়া থাকে । এই মানচিত্রগুলো মৌজা মানচিত্র । এই ধরনের মানচিত্রের মধ্যে বিবিধ তথ্য প্রকাশ করা হয় । শহরের পরিকল্পনার মানচিত্রও এই মৌজা মানচিত্রের অন্তর্ভুক্ত ।
২। ভূসংস্থানিক মানচিত্র ( Topographic map ) : ভূসংস্থানিক- এর আরেক নাম হচ্ছে স্থানীয় বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্র । এই মানচিত্রগুলো প্রকৃত জরিপকার্যের মাধ্যমে প্রস্তুত করা হয় । সাধারণত এর মধ্যে প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক দুই ধরনের উপাদান দেখতে পাওয়া যায় । এই ধরনের মানচিত্রের স্কেল একেবারে ছোট না হলেও মৌজা মানচিত্রের মতো বৃহত্ত নয় । এই মানচিত্রগুলোতে কিন্তু জমির সীমানা দেখানো হয় না । ভূপ্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য হিসেবে পাহাড় , মালভূমি , সমভূমি , নদী , উপত্যকা , হ্রদ প্রভৃতি দেখানো হয় । অন্যদিকে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য হিসেবে রেলপথ , হাটবাজার , পোস্ট অফিস , সরকারি অফিস , খেলার মাঠ , মসজিদ , মন্দির প্রভৃতি নিখুঁতভাবে দেখানো হয় । বর্তমান যুগে বিমান থেকে ছবি তোলার মাধ্যমে এই মানচিত্রের নবযুগের সূচনা হয় । এই মানচিত্রের স্কেল ১ : ২০,০০০ হলে ভালোভাবে বৈশিষ্ট্যগুলো প্রকাশ পায় । বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন স্কেলে এই মানচিত্র তৈরি করে । সবচেয়ে আদর্শ ও জনপ্রিয় হচ্ছে ব্রিটিশদের তৈরি করা মানচিত্র যার স্কেল ছিল ১ : ২৫,০০০ থেকে ১ : ১০০,০০০ এবং আমেরিকাতে এই মানচিত্রের স্কেল থাকে সাধারণত ১ : ৬২,৫০০ এবং ১ : ১২৫,০০০ । বাংলাদেশ সাধারণত ব্রিটিশ স্কেলটি অনুসরণ করে ।
মতামত : একটি দেশ ও মহাদেশের মধ্যে আমরা চাইলে ছোট একটি স্থানকেও সাংকেতিক চিহ্নের মাধ্যমে দেখিয়ে দিতে পারি । সর্বোপরি বলা যায় , কোনো স্থানের অবস্থান থেকে শুরু করে ঐ স্থানের খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে অবহিত হওয়ার জন্য মানচিত্রের কোনো বিকল্প নেই ।
উপসংহার : এই বিশাল পৃথিবীকে অথবা পৃথিবীর বিভিন্ন অংশের এক একটি সামাজিক রূপ এই ধরনের মানচিত্রের মধ্যে যেভাবে ফুটিয়ে তোলা যায় অন্য কোনো উপায়েই তা সম্ভব নয় । স্থানীয় বৈচিত্র্যসূচক মানচিত্রে বিভিন্ন প্রতীক চিহ্নের মাধ্যমে ভূপ্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক বিষয়সমূহের একটি সুন্দর প্রতিচ্ছবি দেখতে পাওয়া যায় ।
প্রতিবেদকের নাম ও ঠিকানা :
‘ক’ দশম শ্রেণি ,
রোল : ০১
মহারাজপুর উচ্চ বিদল্যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
প্রতিবেদন তৈরির তারিখ : ১৯ ফেব্রুয়ারি , ২০২২
প্রতিবেদন তৈরির সময় : রাত ৭ টা ।
SSC (এসএসসি) ভূগোল ও পরিবেশ ১২তম সপ্তাহের এসাইনমেন্ট সমাধান ২০২২, SSC Bhugola O Paribesa 12th week assignment answer 2022
এই রকম আরও তথ্য পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে যুক্ত থাকুন। এর পাশাপাশি গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন।